ব্রাহ্মণবাড়িয়া ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ-আসন পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদ

আসন পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে বিজয়নগরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ

 নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় সংসদের আসন পুনর্বিন্যাসের খসড়ায় তিনটি ইউনিয়ন কেটে নেওয়ার সিদ্ধান্তে বিক্ষুব্ধ হয়ে পড়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলাবাসী। 

এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে তীব্র বিক্ষোভ জানিয়েছেন হাজারো মানুষ।

দুই ঘণ্টার এই অবরোধে মহাসড়কের দু’প্রান্তে চার থেকে পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। গরমে হাঁসফাঁস করা যাত্রীদের ভোগান্তি বাড়লেও, প্রতিবাদকারীদের চোখে ছিল দীর্ঘদিনের বঞ্চনার আগুন।

প্রতিবাদে অংশ নেওয়া চান্দুরা ইউনিয়নের শিক্ষক হাফিজুর রহমান বলেন, স্বাধীনতার এত বছর পরেও আমরা রাস্তাঘাট, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পিছিয়ে। এবার আবার আমাদের উপজেলা ছিন্নভিন্ন করার চেষ্টা চলছে। এটা উন্নয়ন নয়, এটা আমাদের অস্তিত্বে আঘাত।”

সামাজিক ও রাজনৈতিক ঐক্য

অবরোধস্থলে প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়েছিলেন সাধারণ শিক্ষাথীরাও। তাঁদের হাতে লেখা ছিল— ‘বিজয়নগরকে দ্বিখণ্ডিত করা মানে ইতিহাসকে মুছে ফেলা’। বিজয়নগরের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে রাজনৈতিক দলের নেতা, ব্যবসায়ী, সাংস্কৃতিক কর্মী, নারী-পুরুষ, শিক্ষার্থী— সবাই এসেছিলেন এক প্ল্যাটফর্মে। তারা আরো বলেন ‘বুধন্তী, চান্দুরা ও হরষপুর— এই তিনটি ইউনিয়ন ভৌগোলিকভাবে বিজয়নগর উপজেলা সদরঘেঁষা এবং এখানকার জনসংখ্যা ও রাজনৈতিক সক্রিয়তা গুরুত্বপূর্ণ। কোনো ধরনের জনমত যাচাই না করে, রাতারাতি এগুলো সরিয়ে অন্য আসনে ঠেলে দেওয়া গণতান্ত্রিক নয়।’

এসময় দ্বিখণ্ডিত বিজয়নগর প্রতিরোধ সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা দাবি, ‘এই চক্রান্তের মাধ্যমে বিজয়নগর উপজেলাকে একদিকে যেমন প্রশাসনিকভাবে দুর্বল করা হচ্ছে, অন্যদিকে আমাদের স্বপ্নভঙ্গ করা হচ্ছে। আমরা এক ইঞ্চিও পিছু হটব না।’

জানা গেছে, আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন ৩৯টি আসনের সীমানায় রদবদল এনে একটি খসড়া তালিকা প্রকাশ করেছে। এর মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসন থেকে বুধন্তী, চান্দুরা ও হরষপুর ইউনিয়নকে কেটে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের সঙ্গে যুক্ত করার প্রস্তাব আছে। এই তিন ইউনিয়ন কেটে নিলে বিজয়নগর উপজেলা কার্যত বিভক্ত হয়ে পড়ে। স্থানীয়রা বলছেন, এর ফলে উপজেলার প্রশাসনিক কাঠামো দুর্বল হয়ে পড়বে এবং উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে জটিলতা সৃষ্টি হবে।




শেয়ার করুন