মোঃ জুয়েল খাঁন
ভোটাধিকার ফেরাতে মাঠে নামুন’ — নেতাদের দৃঢ় বার্তা
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল–বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে আয়োজিত র্যালি ও আলোচনা সভা ছিল শুধুই আনুষ্ঠানিকতা নয়; বরং ছিল আগামী দিনের রাজনৈতিক সংগ্রামের রূপরেখা তুলে ধরার এক মঞ্চ। স্থানীয় নেতাদের বক্তব্যে উঠে এসেছে দীর্ঘ দমন–পীড়নের ইতিহাস, ভোটাধিকার হারানোর বেদনা, আবার ভবিষ্যতের আন্দোলনে দৃঢ় প্রত্যয়ের আহ্বান।
সোমবার সকালে উপজেলা শহরের প্রধান সড়কজুড়ে সাজ সাজ রব। হাতে দলীয় পতাকা, পোস্টার, ব্যানার—কর্মীরা ভিড় জমালেন র্যালিতে। ঢোলের শব্দ, স্লোগান আর নেতৃত্ব পুনরুদ্ধারের অঙ্গীকারে প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে ছোট্ট উপজেলা শহর। চারদিকে এক ধরনের উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়ে, যেন এই আয়োজন কেবল প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী নয়, বরং দীর্ঘ আন্দোলনের প্রস্তুতির বার্তা।
‘ভোটাধিকার ফেরাতে মাঠে থাকতে হবে’
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সহসভাপতি একে এম কামরুজ্জামান মামুন। তাঁর বক্তব্যে ছিল ক্ষোভ আর দৃঢ়তা—“দেশ আজ কঠিন সময় পার করছে। জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঠে থাকতে হবে। গত ১৭ বছরে বিএনপির তিন হাজার নেতা–কর্মী গুম হয়েছেন, ষাট লাখ মানুষ মামলা–হামলার শিকার হয়েছেন। ফ্যাসিস্টদের কারণে আমরা মসজিদে মিলাদও করতে পারিনি।”
তিনি আরো বলেন, “কিছু ভাই এমপি হওয়ার স্বপ্ন দেখে, কিন্তু ভোট নেই। নাসিরনগরের ভোটে বগুড়ায় এমপি বানানোর পিআর পদ্ধতি জনগণ মেনে নেবে না। এই ভাঁওতাবাজির শেষ হতে হবে।”
নাসিরনগরে বিভিন্ন জলাশয়ে পোনামাছ অবমুক্তি
নাসিরনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার বিভিন্ন জলাশয়ে ৪৮৬ কেজি পোনামাছ অবমুক্তি করা হয়েছে। বুধবার (২৭ আগস্ট) সকালে উপজেলা ডাকবাংলো ঘাটে উপজেলা পরিষদ পুকুর ও চাপরতলা পুকুরে এই কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফাহিমুল আরেফীন, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও মৎস্যজীবীরা।
অতিথিরা বলেন, এ ধরনের উদ্যোগ স্থানীয় জলাশয়ে মাছের প্রাকৃতিক উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। একই সঙ্গে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও মৎস্যজীবীদের আর্থিক উন্নয়নে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
পরে অতিথিরা প্রতীকীভাবে বিভিন্ন প্রজাতির পোনা মাছ অবমুক্ত করেন।
চাতলপাড় ডিগ্রি কলেজে নবগঠিত গভর্নিং বডির পরিচিতি ও মতবিনিময় সভা, শিক্ষার মানোন্নয়নে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার আহ্বান
মুনতাসির কবির
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী চাতলপাড় ডিগ্রি কলেজে নবগঠিত গভর্নিং বডির পরিচিতি ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার কলেজের অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এ সভায় নতুন কমিটিকে স্বাগত জানানো হয় এবং শিক্ষার মানোন্নয়নে নানা দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়।
মানিরুল হোসাইন ও কাজী জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চালনায় সভায় সভাপতিত্ব করেন নবগঠিত গভর্নিং বডির সভাপতি প্রকৌশলী মো. আব্দুল বাছির। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি এম এ হান্নান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কে এম বশির উদ্দিন (তুহিন)।
গভর্নিং বডির অন্যান্য সদস্যরা হলেন—বিদ্যুৎসাহী সদস্য: অ্যাডভোকেট মো. আরাফাত উল্লাহ, দাতা সদস্য: হুমায়ুন কবির ভূঁইয়া হিতুসি সদস্য: ওয়াসিম ভূঁইয়া, অভিভাবক সদস্য: মো. আলাউদ্দীন মিয়া, মো. এনামুল হক, মো. নজরুল ইসলাম, শিক্ষক প্রতিনিধি: মো. রহমত আলী, মোছা. সালমা খানম
সভায় প্রধান অতিথি এম এ হান্নান বলেন, “চাতলপাড় ডিগ্রি কলেজ এই অঞ্চলের শিক্ষার আলোকবর্তিকা। আমরা চাই নতুন গভর্নিং বডির নেতৃত্বে কলেজটি আরও এগিয়ে যাক।”
সভাপতি প্রকৌশলী মো. আব্দুল বাছির বলেন, “শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবক সবার সহযোগিতায় আমরা শিক্ষার মানোন্নয়নে বাস্তবধর্মী পদক্ষেপ নেব।”
অনুষ্ঠানে বক্তারা নবগঠিত গভর্নিং বডিকে অভিনন্দন জানান এবং কলেজের সার্বিক উন্নয়নে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।
গোকর্ণ কলেজে পল্লী রক্তদানের ক্যাম্পেইন, বিনামূল্যে ২৬৫ জন শিক্ষার্থীর রক্তের গ্রুপ নির্ণয়
নাসিরনগর প্রতিনিধি
রক্তদানে তরুণদের উদ্বুদ্ধ করতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে পল্লী রক্তদান ও সামাজিক সংগঠন। গত মঙ্গলবার উপজেলার গোকর্ণ সৈয়দ ওয়ালী উল্লাহ স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত ক্যাম্পেইনে ২৬৫ জন শিক্ষার্থীর রক্তের গ্রুপ বিনামূল্যে নির্ণয় করা হয়।
সকালে কলেজ হলরুমে সচেতনতামূলক আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শুরু হয়। পল্লী রক্তদান ও সামাজিক সংগঠনের সদস্য আশিকুল হক আফনানের সঞ্চালনায় প্রতিষ্ঠাতা তন্ময় আহমেদ শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন। আলোচনায় আরও বক্তব্য রাখেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সনজিত কুমার দেব, প্রভাষক শাহজালাল, শিক্ষক প্রদীপ চন্দ্র দাস, শিক্ষিকা সাইমা আক্তার, মাওলানা জসিম উদ্দিন ও মো. খাইরুল ইসলাম।
ফকিরদিয়া বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিনে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল
মুনতাসির কবির নিজস্ব প্রতিবেদক
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার চাতলপাড় ইউনিয়নের ফকিরদিয়া গ্রামে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ৮১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় ফকিরদিয়া ৮নং ওয়ার্ড বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে মেসার্স ইনসাফ ট্রেডার্স মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠান হয়। ৮নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইনছাফ আলীর সভাপতিত্বে ও শেখ মনিরুজ্জামান আনসারী আবুসামার সঞ্চালনায় আয়োজনটি সম্পন্ন হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন—চাতলপাড় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. সোহরাফ খান, ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও নাসিরনগর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. মাহে আলম ভূঁইয়া, চাতল ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট আরাফাত উল্লাহ, সাবেক উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আলগীর হোসেন, চাতলপাড় ইউনিয়ন যুবদলের সিনিয়র সভাপতি সোহাগ ভূঁইয়া, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক জাসাজ নাসিরনগর উপজেলা সাইফুল ইসলাম জানু, স্বেচ্ছাসেবক দল চাতলপাড় ইউনিয়নের আহ্বায়ক মোহাম্মদ আফজাল হোসেন, কচুয়া ৮নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া, সাবেক সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম এবং মোহাম্মদ ওয়ালীউল্লাহ সরকার।
এ ছাড়া স্থানীয় বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বেগম খালেদা জিয়ার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে নেতারা আলোচনা করেন এবং দলকে আরও সুসংগঠিত করার আহ্বান জানান।
নাসিরনগরে খালেদা জিয়ার ৮১তম জন্মদিনে দোয়া মাহফিল
নাসিরনগরে ‘খান্দুরা হাভেলির ইতিহাস’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন
জুয়েল খাঁ নাসিরনগর থেকে
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে ‘খান্দুরা হাভেলির ইতিহাস’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) রাতে উপজেলার চাপরাতলা ইউনিয়নের খান্দুরা হাভেলিতে এ আয়োজন হয়।
শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন।
সুফি ঐতিহ্যের দলিল
‘খানায়ে দাউড়া থেকে খান্দুরা হযরত সৈয়দ ছালেহ মুহাম্মদ (রাহ.) ও খান্দুরা হাভেলির ইতিহাস’ শিরোনামের বইটি রচনা করেছেন সৈয়দ আহমদ বখ্ত (মতিন)। বইটি প্রকাশ করেছে বিশ্ব লালন সংঘ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন হাজিরাতুল কুদসিয়া দরবার শরীফের পীর সৈয়দ মাসুদ বখ্ত কায়েদ (মা. আ.)। বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শাহ্ কাউসার মুস্তফা আবুল উলায়ী, অষ্টগ্রাম হাভেলির সৈয়দ ফাইয়াজ হাসান (বাবু), নরপতি হাভেলির সৈয়দ লিয়াকত হাসান, বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক ড. সৈয়দ শাহ এমরান, ফান্দাউক দরবার শরিফের মুফতি সৈয়দ মঈন উদ্দিন আল হোসাইনী, নাছিরপুর দরবার শরীফের সৈয়দ আশরাফুল আবদাল মুকাল্লিদ, খান্দুরা দরবার শরীফের সৈয়দ সোহেল আবদাল, সাবেক সাংসদের পুত্র সৈয়দ সাজ্জাদ মোর্শেদ সোহান, সাংবাদিক ও গবেষক তরুণ সরকার, এবং দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের সহকারী বার্তা সম্পাদক আল আমিন চৌধুরী প্রমুখ।
প্রকাশক আবদেল মাননান অনুষ্ঠানে সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করেন। এতে অংশ নেন খান্দুরা হাভেলিসহ বিভিন্ন হাভেলির পীর ও মাশায়েখগণ।
লেখকের বক্তব্য
সৈয়দ আহমদ বখ্ত (মতিন) বলেন, “দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অন্যতম নিদর্শন হাভেলিগুলো। এগুলো সুফিবাদ ও রাষ্ট্রীয় ইতিহাসের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে এ ঐতিহ্য তুলে ধরতেই বইটি প্রকাশ করেছি।”
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিআরজে এর নতুন কমিটি গঠিত, সভাপতি মোজাম্মেল-সম্পাদক রুবেল
নাসিরনগরে বাবার হাত-পায়ের রগ কেটে হত্যাচেষ্টা, দুই সপ্তাহ পর পুত্র গ্রেপ্তার
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগওে পারিবারিক সম্পত্তি দখলকে কেন্দ্র করে বাবাকে নির্মমভাবে কুপিয়ে দুই হাত ও পায়ের রগ কেটে হত্যার চেষ্টা মামলার প্রধান আসামি মাসুক মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৯।
প্রায় দুই সপ্তাহের গোপন নজরদারি ও অভিযান চালিয়ে রবিবার (১১ আগস্ট) রাতে হবিগঞ্জের মাধবপুরের হরিণখোলা বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় ৩০ জুলাই নাসিরনগর থানায় মামলা হয়।
গত মাসের ২৯ জুলাই সমকালের অনলাইনে ‘জমি দখল নিতে বাবার হাত-পায়ের রগ কাটল ছেলে’ এই শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়।
ঘটনার সূত্রপাত ২৬ জুলাই সকালে। নাসিরনগর উপজেলার চাপরতলা ইউনিয়নের তারাউল্লা গ্রামের বাসিন্দা ধন মিয়ার দুই সংসার — প্রথম স্ত্রীর ঘরে ৫ ছেলে ও ১ মেয়ে, দ্বিতীয় স্ত্রীর ঘরে ২ ছেলে ও ৩ মেয়ে। দীর্ঘদিন আগে সাত ছেলেকে আলাদা করে বাড়ি ও সম্পত্তি বুঝিয়ে দেন ধন মিয়া। কিন্তু প্রথম পক্ষের কয়েক ছেলে বাড়ির সামনের একটি জমি হস্তান্তরের জন্য চাপ দিতে থাকে। ধন মিয়া রাজি না হলে কথা কাটাকাটির জেরে ঘটনার দিন সকালে স্থানীয় মসজিদের সামনে ধারালো অস্ত্র নিয়ে তার ওপর হামলা ছেলে মাসুক।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, মাসুকসহ কয়েকজন দা দিয়ে ধনু মিয়ার হাত, পা ও বুকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। সে সময় তার দুই হাত ও পায়ের রগ কেটে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। পরের দিন সোমবার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে পাঠান। এর পর তাকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়।
মামলা দায়েরের পর থেকেই পলাতক ছিলেন মাসুক। র্যাব জানায়, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৯-এর ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও শায়েস্তাগঞ্জ ক্যাম্পের যৌথ দল হরিণখোলা বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে নাসিরনগর থানায় হস্তান্তর করা হয়।
চাপরতলা ইউনিয়নের তারাউল্লাহ গ্রামের একাধিক বাসিন্দা এ প্রতিবদেককে বলেন, মাসুক শুধু তার বাবার হাত-পায়ের রগ কাটেনি। সে এলাকার বিভিন্ন বাড়িতে ডাকাতি করতে গিয়ে মানুষকে নির্মমভাবে কুপিয়ে আহত করে। সে একজন আন্তজেলা ডাকাত দলে সদস্য। তাকে র্যাব ধরায় এলাকায় চুরি-ডাকাতি কমে আসবে। আমরা সবাই মিষ্টি বিতরণ করবো।
নাসিরনগর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজহারুল ইসলাম সমকালকে বলেন, মাসুককে বেশকিছুদিন ফলোআপে রেখে র্যাবসহ আমাদের পুলিশের যৌথ অভিযানে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই। পওে যথাযত প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আদালতে হস্তান্তর করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহীনা নাসরিন জানান, সন্তানের হাতে বৃদ্ধ পিতা রক্তাক্ত জখম হয় এটা মেনে নেওয়ার মতো না। আমরাও একদিন বৃদ্ধ হবো। একজন প্রশাসক হিসেবে আমি সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি।
র্যাব-৯ এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এ ধরনের অপরাধীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।

৭১ সালে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন- বলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির অর্থনৈতিকবিষয়ক সম্পাদক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সভাপতি প্রকৌশলী খালেদ হোসেন মাহবুব
জনগণ বিপক্ষে গেলে সংবিধানও রক্ষা করতে পারে না-ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় খালেদ হোসেন মাহবুব
নিজস্ব প্রতিবেদক
কেন্দ্রীয় বিএনপির অর্থনৈতিকবিষয়ক সম্পাদক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সভাপতি প্রকৌশলী খালেদ হোসেন মাহবুব বলেছেন, “জনগণ যার পক্ষে থাকে, সব শক্তি তার পক্ষে থাকে। কিন্তু জনগণ বিপক্ষে গেলে সংবিধান, আইন কিংবা পুলিশ—কেউ রক্ষা করতে পারে না।”
ফারাবিকে মুক্তি না দিলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি
নিজস্ব প্রতিবেদক
১১ বছর ধরে কারাবন্দি শফিউর রহমান ফারাবির নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
শুক্রবার (৮ আগস্ট) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সামনে “জাস্টিস ফর ফারাবি টিম ব্রাহ্মণবাড়িয়া” নামক সংগঠনটির আয়োজনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এক পরিবারের ৭ জন নিহত
নিজস্ব প্রতিবেদক, লক্ষীপুর
ওমান প্রবাসীকে নিয়ে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে ফেরার পথে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় একটি মাইক্রোবাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খালে পড়ে সাতজন যাত্রী নিহত হয়েছেন।
বুধবার ভোরে লক্ষ্মীপুর-নোয়াখালী মহাসড়কের বেগমগঞ্জ উপজেলার আলাইয়াপুর ইউনিয়নের পূর্ব জগদীশপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন ফয়জুন নেসা (৮০), খুরশিদা বেগম (৫৫), কবিতা বেগম (৩০), লাবনী বেগম (৩০), রেশমি আক্তার (১০), মীম আক্তার (২) ও লামিয়া আক্তার (৯)।
তাঁরা লক্ষ্মীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ থানার হাজীরপাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম চৌপালী এলাকার বাসিন্দা।দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নোয়াখালী ফায়ার সার্ভিসের চৌমুহনী স্টেশনের কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক।
তিনি বলেন, দুর্ঘটনাকবলিত মাইক্রোবাসটিতে এক প্রবাসীর পরিবারের সদস্যরা ছিলেন। ওমানফেরত ওই প্রবাসীকে নিয়ে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে ফেরার পথে মাইক্রোবাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খালে পড়ে যায়।
মোজাম্মেল হক আরও বলেন, মাইক্রোবাসটিতে চালকসহ ১১ জন ছিলেন। এর মধ্যে দুর্ঘটনার পর চালকসহ ৪ জন বের হয়ে যান। অন্য ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহত ব্যক্তিরা মাইক্রোবাসের পেছনের সিটগুলোতে ছিলেন।
মাইক্রোবাসের চালক ঘুমে থাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা। নিহত ব্যক্তিদের মরদেহ চন্দ্রগঞ্জ হাইওয়ে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোবারক হোসেন ভূঁইয়া বলেন, দুর্ঘটনাকবলিত মাইক্রোবাসটি উদ্ধার করা হয়েছে। হতাহত ব্যক্তিদের পরিবারের অভিযোগ পেলে এ বিষয়ে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আশুগঞ্জে এসিল্যান্ডের সঙ্গে এনসিপি নেতাদের বাকবিতণ্ডা, থানায় সাধারণ ডায়েরি
নাসিরনগরে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি পুলিশের হাতে আটক
নিজস্ব প্রতিবেদক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করেছে নাসিরনগর থানা পুলিশ।
তাঁর গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজহারুল ইসলাম।
মঙ্গলবার (৫ আগষ্ট) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে তাকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের ফুলপুর গ্রাম থেকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আটক করা হয়।
নাসিরনগর থানা পুলিশের তথ্য মতে , তাঁর বিরুদ্ধে নাসিরনগর থানায় বিস্ফোরকদব্য আইনে মামলা রয়েছে।
নাসিরনগরে ঘরে ঘরে জ্বরের মহামারি
শুক্রবারে করণীয়: এই দিনে রাসুল (সা.) যা করতেন
শুক্রবার ইসলাম ধর্মে একটি অত্যন্ত মর্যাদাসম্পন্ন দিন। পবিত্র কোরআন ও সহিহ হাদিসে এই দিনের বিশেষ ফজিলত ও গুরুত্ব বর্ণিত হয়েছে। এই দিনে জুমার নামাজ, দরুদ পাঠ, গোসল, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও দোয়ার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে যেমন এই দিনে কিছু আমল করতেন, তেমনি তিনি তাঁর উম্মতদেরও তা অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রথমত, এই দিনে পবিত্রতা অর্জনের জন্য গোসল করা এবং পরিষ্কার কাপড় পরা সুন্নাত। আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, “প্রত্যেক বয়ঃপ্রাপ্ত মুসলিমের উচিত প্রতি শুক্রবার গোসল করা, মিসওয়াক করা এবং সম্ভব হলে সুগন্ধি ব্যবহার করা।” (সহিহ মুসলিম)
দ্বিতীয়ত, শুক্রবার সূরা কাহফ তিলাওয়াত করা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। হাদিসে এসেছে, “যে ব্যক্তি জুমার দিন সূরা কাহফ তিলাওয়াত করবে, তার পা থেকে মাথা পর্যন্ত নূর বিচ্ছুরিত হবে এবং তা পরবর্তী জুমা পর্যন্ত স্থায়ী থাকবে।” (আল-মুস্তাদরাক)
তৃতীয়ত, এই দিন দরুদ শরিফ পড়া ও বেশি বেশি জিকির-আসকারে মনোযোগ দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাসুল (সা.) বলেছেন, “তোমরা জুমার দিনে আমার ওপর বেশি করে দরুদ পাঠ করো, কেননা সেই দিন আমার কাছে তোমাদের দরুদ পেশ করা হয়।” (সুনানে আবু দাউদ)
চতুর্থত, জুমার নামাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কোরআনে বলা হয়েছে, “হে মুমিনগণ! জুমার দিনে যখন নামাজের আহ্বান দেয়া হয়, তখন আল্লাহর স্মরণে ধাবিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় ত্যাগ করো।” (সূরা জুমু’আ: ৯)
পঞ্চমত, শুক্রবারে এমন একটি মুহূর্ত থাকে যখন বান্দার দোয়া কবুল হয়। রাসুল (সা.) বলেন, “জুমার দিন একটি বিশেষ সময় আছে, সে সময়ে কোনো মুসলমান আল্লাহর কাছে কোনো কল্যাণ প্রার্থনা করলে আল্লাহ তা কবুল করেন।” (সহিহ বুখারি ও মুসলিম)
ষষ্ঠত, এই দিনে পরিবারের সঙ্গে সুন্দর সময় কাটানো এবং গরিব-দুঃখীদের প্রতি সদয় হওয়াও ইসলামের শিক্ষা। রাসুলুল্লাহ (সা.) মুসাফাহা, হাসিমুখে কথা বলা ও মানুষকে উপকারে আসাকে ঈমানের অঙ্গ বলে বর্ণনা করেছেন।
সপ্তমত, জুমার দিন দুনিয়াবি কাজকর্ম থামিয়ে কিছু সময় কোরআন পাঠ ও ইবাদতে মগ্ন হওয়া বিশেষ ফজিলতপূর্ণ। এটি শুধু নেকি অর্জনের সুযোগই নয়, বরং আত্মার প্রশান্তি লাভের মাধ্যম।
অষ্টমত, জুমার দিন আল্লাহর রহমত, বরকত ও মাগফিরাত লাভের বিশেষ সুযোগ। এদিন গুনাহ মাফ, জান্নাতের আশাবাদ এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তির প্রার্থনা করার আদর্শ সময়। এই দিনকে সর্বোচ্চভাবে কাজে লাগানো প্রতিটি মুসলিমের কর্তব্য।