Showing posts with label রাজশাহী. Show all posts
Showing posts with label রাজশাহী. Show all posts
৩০০ কিমি পাড়ি দিয়ে তরুণীর বাড়িতে তরুণের ‘আত্মহত্যা’

৩০০ কিমি পাড়ি দিয়ে তরুণীর বাড়িতে তরুণের ‘আত্মহত্যা’


নিজস্ব প্রতিবেদক, সিরাজগঞ্জ

প্রেমিকার বিয়ের খবরে কাতর হয়ে ঠাকুরগাঁও থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে সিরাজগঞ্জে এসে বিষপান করেন গোলাম ফেরদৌস দুর্লভ (২৪) নামে এক তরুণ। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

ঘটনাটি ঘটেছে গত সোমবার (৪ আগস্ট) সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার চৌবাড়ি গ্রামে। ওই দিন দুপুরে প্রেমিকার বাড়ির কাছে বিষপান করেন দুর্লভ। পরে তাঁকে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে রাতেই তিনি মারা যান।

দুর্লভের বাড়ি ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার লাইরিহাট পাতিলভাসা গ্রামে। তিনি স্থানীয় একটি কলেজে স্নাতক শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ছিলেন।

পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, কয়েক মাস আগে একটি ভিডিও তৈরির অ্যাপ টিকটকের মাধ্যমে সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার এক কলেজপড়ুয়া তরুণীর সঙ্গে দুর্লভের পরিচয় হয়। ধীরে ধীরে সম্পর্ক গড়ায় প্রেমে। কিন্তু তিন মাস পর তরুণী পরিবারের চাপে অন্যত্র বিয়েতে রাজি হন। বিষয়টি জানতে পেরে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন দুর্লভ।

তরুণীর বিয়ের খবর শোনার পর সোমবার সকালে বাড়ি থেকে কাউকে কিছু না জানিয়েই সিরাজগঞ্জের চৌবাড়ি এলাকায় পৌঁছান দুর্লভ। সেখানেই মেয়েটির বাড়ির পাশে বিষপান করেন বলে স্থানীয়রা জানান।

পরে পরিবারের সদস্যদের খবর দেওয়া হলে তাঁরা কামারখন্দ থানার সহায়তায় সিরাজগঞ্জে আসেন। গতকাল মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) ময়নাতদন্ত শেষে দুর্লভের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

দুর্লভের খালু সজীব হোসেন ও ভাই ওয়াজেদুর রহমান জানান, মেয়েটি এবং তাঁর পরিবার ঘটনার পরপরই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে মেয়েটি ও তাঁর মা দুর্লভের স্বজনদের মুখোমুখি হন। মেয়েটি পুলিশের সামনে জানান, পারিবারিক সিদ্ধান্তেই তাঁর বিয়ে ঠিক হয়েছে।

তবে দুর্লভের পরিবারের দাবি, মেয়েটি বিষয়টি আগেই জানাতে পারত। এমন আচরণে দুর্লভ মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে আত্মহননের পথ বেছে নেয়।

এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, এটি একটি অপমৃত্যুর (ইউডি) মামলা হিসেবে রেকর্ড হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

একই কথা বলেন কামারখন্দ থানার ওসি আব্দুর রউফও। তিনি জানান, তরুণের মৃত্যুর পেছনে যদি প্ররোচনার প্রমাণ পাওয়া যায় এবং পরিবার অভিযোগ দেয়, তাহলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শুক্রবারে করণীয়: এই দিনে রাসুল (সা.) যা করতেন

শুক্রবারে করণীয়: এই দিনে রাসুল (সা.) যা করতেন

শুক্রবার ইসলাম ধর্মে একটি অত্যন্ত মর্যাদাসম্পন্ন দিন। পবিত্র কোরআন ও সহিহ হাদিসে এই দিনের বিশেষ ফজিলত ও গুরুত্ব বর্ণিত হয়েছে। এই দিনে জুমার নামাজ, দরুদ পাঠ, গোসল, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও দোয়ার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে যেমন এই দিনে কিছু আমল করতেন, তেমনি তিনি তাঁর উম্মতদেরও তা অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছেন।


প্রথমত, এই দিনে পবিত্রতা অর্জনের জন্য গোসল করা এবং পরিষ্কার কাপড় পরা সুন্নাত। আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, “প্রত্যেক বয়ঃপ্রাপ্ত মুসলিমের উচিত প্রতি শুক্রবার গোসল করা, মিসওয়াক করা এবং সম্ভব হলে সুগন্ধি ব্যবহার করা।” (সহিহ মুসলিম)


দ্বিতীয়ত, শুক্রবার সূরা কাহফ তিলাওয়াত করা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। হাদিসে এসেছে, “যে ব্যক্তি জুমার দিন সূরা কাহফ তিলাওয়াত করবে, তার পা থেকে মাথা পর্যন্ত নূর বিচ্ছুরিত হবে এবং তা পরবর্তী জুমা পর্যন্ত স্থায়ী থাকবে।” (আল-মুস্তাদরাক)


তৃতীয়ত, এই দিন দরুদ শরিফ পড়া ও বেশি বেশি জিকির-আসকারে মনোযোগ দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাসুল (সা.) বলেছেন, “তোমরা জুমার দিনে আমার ওপর বেশি করে দরুদ পাঠ করো, কেননা সেই দিন আমার কাছে তোমাদের দরুদ পেশ করা হয়।” (সুনানে আবু দাউদ)


চতুর্থত, জুমার নামাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কোরআনে বলা হয়েছে, “হে মুমিনগণ! জুমার দিনে যখন নামাজের আহ্বান দেয়া হয়, তখন আল্লাহর স্মরণে ধাবিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় ত্যাগ করো।” (সূরা জুমু’আ: ৯)


পঞ্চমত, শুক্রবারে এমন একটি মুহূর্ত থাকে যখন বান্দার দোয়া কবুল হয়। রাসুল (সা.) বলেন, “জুমার দিন একটি বিশেষ সময় আছে, সে সময়ে কোনো মুসলমান আল্লাহর কাছে কোনো কল্যাণ প্রার্থনা করলে আল্লাহ তা কবুল করেন।” (সহিহ বুখারি ও মুসলিম)


ষষ্ঠত, এই দিনে পরিবারের সঙ্গে সুন্দর সময় কাটানো এবং গরিব-দুঃখীদের প্রতি সদয় হওয়াও ইসলামের শিক্ষা। রাসুলুল্লাহ (সা.) মুসাফাহা, হাসিমুখে কথা বলা ও মানুষকে উপকারে আসাকে ঈমানের অঙ্গ বলে বর্ণনা করেছেন।


সপ্তমত, জুমার দিন দুনিয়াবি কাজকর্ম থামিয়ে কিছু সময় কোরআন পাঠ ও ইবাদতে মগ্ন হওয়া বিশেষ ফজিলতপূর্ণ। এটি শুধু নেকি অর্জনের সুযোগই নয়, বরং আত্মার প্রশান্তি লাভের মাধ্যম।


অষ্টমত, জুমার দিন আল্লাহর রহমত, বরকত ও মাগফিরাত লাভের বিশেষ সুযোগ। এদিন গুনাহ মাফ, জান্নাতের আশাবাদ এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তির প্রার্থনা করার আদর্শ সময়। এই দিনকে সর্বোচ্চভাবে কাজে লাগানো প্রতিটি মুসলিমের কর্তব্য।