ভোটাধিকার ফেরাতে মাঠে নামুন’ — নেতাদের দৃঢ় বার্তা

 প্রথম ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিবেদক
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল–বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে আয়োজিত র‍্যালি ও আলোচনা সভা ছিল শুধুই আনুষ্ঠানিকতা নয়; বরং ছিল আগামী দিনের রাজনৈতিক সংগ্রামের রূপরেখা তুলে ধরার এক মঞ্চ। স্থানীয় নেতাদের বক্তব্যে উঠে এসেছে দীর্ঘ দমন–পীড়নের ইতিহাস, ভোটাধিকার হারানোর বেদনা, আবার ভবিষ্যতের আন্দোলনে দৃঢ় প্রত্যয়ের আহ্বান।

রঙিন র‍্যালি, উচ্ছ্বসিত কর্মীরা
সোমবার সকালে উপজেলা শহরের প্রধান সড়কজুড়ে সাজ সাজ রব। হাতে দলীয় পতাকা, পোস্টার, ব্যানার—কর্মীরা ভিড় জমালেন র‍্যালিতে। ঢোলের শব্দ, স্লোগান আর নেতৃত্ব পুনরুদ্ধারের অঙ্গীকারে প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে ছোট্ট উপজেলা শহর। চারদিকে এক ধরনের উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়ে, যেন এই আয়োজন কেবল প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী নয়, বরং দীর্ঘ আন্দোলনের প্রস্তুতির বার্তা।

ভোটাধিকার ফেরাতে মাঠে থাকতে হবে’
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সহসভাপতি একে এম কামরুজ্জামান মামুন। তাঁর বক্তব্যে ছিল ক্ষোভ আর দৃঢ়তা—“দেশ আজ কঠিন সময় পার করছে। জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঠে থাকতে হবে। গত ১৭ বছরে বিএনপির তিন হাজার নেতা–কর্মী গুম হয়েছেন, ষাট লাখ মানুষ মামলা–হামলার শিকার হয়েছেন। ফ্যাসিস্টদের কারণে আমরা মসজিদে মিলাদও করতে পারিনি।”

তিনি আরো বলেন, “কিছু ভাই এমপি হওয়ার স্বপ্ন দেখে, কিন্তু ভোট নেই। নাসিরনগরের ভোটে বগুড়ায় এমপি বানানোর পিআর পদ্ধতি জনগণ মেনে নেবে না। এই ভাঁওতাবাজির শেষ হতে হবে।”

‘৫ আগষ্টে হাসিনার পতন হলেও, দোসররা রয়ে গেছে’
প্রধান বক্তা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কেএম বশির উদ্দিন তুহিন তাঁর বক্তব্যে বলেন, “ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হলেও অফিস–আদালতে তাদের দোসররা এখনও সক্রিয়। তারা নানাভাবে ষড়যন্ত্র করছে, নাটক সাজাচ্ছে।  তাঁর কথায় বারবার উঠে এসেছে “ঐক্যের ডাক”—নিজ নিজ অবস্থান থেকে দলের নেতাকর্মীদের মাঠে নামার আহ্বান।


ভিন্ন আঙ্গিক: স্মৃতিচারণ ও ক্ষোভ
সভায় শুধু রাজনৈতিক বার্তাই নয়, ছিল আন্দোলনে নিহতদের স্মৃতিচারণ। বক্তারা দাবি তুলেছেন, ৫ আগস্টের শহীদ পরিবারকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ ও আহতদের পুনর্বাসন দিতে হবে। এতে উপস্থিত নেতাকর্মীরা বারবার স্লোগানে ফেটে পড়েন। দীর্ঘ দমন–পীড়ন, মামলা–হামলায় সংগঠনটি ভাঙা–গড়ার মধ্যে দিয়ে গেছে। এ অবস্থায় স্থানীয় নেতাদের বক্তব্যে যে হতাশার পাশাপাশি দৃঢ় প্রত্যয় প্রকাশ পেয়েছে, তা ভবিষ্যতে রাজপথের রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।

সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আমিরুল হক চকদার, সহসভাপতি আব্দুল হাই, যুবদলের আহ্বায়ক মীর মোস্তফা জালাল, মহিলা দলের সাবেক সভানেত্রী হাসনা হেনা, ছাত্রদল ও শ্রমিক দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা। ইউনিয়ন পর্যায়েও বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিত ছিলেনা।

শেয়ার করুন